মানবধর্ম (লালন শাহ্)

অষ্টম শ্রেণি (দাখিল) - সাহিত্য কণিকা (বাংলা) কবিতা | - | NCTB BOOK

সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে। 

লালন কয়, জেতের কী রূপ, দেখলাম না এ নজরে ॥

 

কেউ মালা, কেউ তসবি গলায়,

তাইতে কি জাত ভিন্ন বলায়, 

যাওয়া কিংবা আসার বেলায় 

        জেতের চিহ্ন রয় কার রে ॥

 

গর্তে গেলে কূপজল কয়, 

গঙ্গায় গেলে গঙ্গাজল হয়, 

মূলে এক ভাল, সে যে ভিন্ন নয়,

       ভিন্ন জানায় পাত্র-অনুসারে ॥

 

জগৎ বেড়ে জেতের কথা, 

লোকে গৌরব করে যথা তথা, 

লালন সে জেতের ফাতা 

       বিকিয়েছে সাধ বাজারে।

common.content_added_by

শব্দার্থ ও টীকা

কয় — বলে।

জেতের — জাতের। এখানে জাতি বা ধর্মকে বোঝানো হয়েছে ।

যাওয়া কিংবা আসার বেলায় — জন্ম বা মৃত্যুর সময় ।

কূপজল — কুয়োর পানি ।

গঙ্গাজল — গঙ্গা নদীর পানি। এখানে পবিত্র অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। গঙ্গার জল হিন্দুদের কাছে পবিত্রতার প্রতীক। 

জেতের ফাতা — জাত বা ধর্মের বৈশিষ্ট্য অর্থে ।

common.content_added_by

পাঠের উদ্দেশ্য

এই কবিতা পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বুঝতে সক্ষম হবে যে, ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচিতির চেয়ে মানুষ হিসেবে পরিচয়টাই বড়। তারা জাত-পাত বা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বা মিথ্যে গর্ব করা থেকে বিরত থাকবে।

common.content_added_by

পাঠ-পরিচিতি

‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে' গানটি 'মানবধর্ম' কবিতা হিসেবে এ গ্রন্থে গৃহীত হয়েছে। এ কবিতায় লালন ফকির মানুষের জাত-পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। লালন নিজে কোন ধর্মের বা জাতের এমন প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। লালন বলেছেন, জাতকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। মনুষ্যধর্মই মূলকথা ৷ কারো গলায় মালা, কারো হাতে তসবি থাকে । এগুলো ভিন্ন ভিন্ন জাতের পরিচয় বহন করে । কিন্তু জন্ম বা মৃত্যুর সময় মানুষের জাতের কোনো চিহ্ন থাকে না। মানুষ জাত ও ধর্মভেদে যে ভিন্নতার কথা বলে লালন তা বিশ্বাস করেন না।

common.content_added_and_updated_by

লেখক-পরিচিতি

লালন শাহ্ মানবতাবাদী মরমি কবি। সাধক সিরাজ সাঁই বা সিরাজ শাহ্ শিষ্যত্ব গ্রহণ করার পর তিনি লালন সাঁই বা লালন শাহ্ নামে পরিচিতি অর্জন করেন। গানে তিনি নিজেকে ফকির লালন হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালাভ না করলেও নিজের চিন্তা ও সাধনায় তিনি হিন্দু ও মুসলমানের ধর্মীয় শাস্ত্র সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। এই জ্ঞানের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির মিলনে তিনি নতুন এক দর্শন প্রচার করেন। গানের মধ্য দিয়ে তাঁর এই দর্শন প্রকাশ পেয়েছে। অধ্যাত্মভাব ও মরমি রসব্যঞ্জনা তাঁর গানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেন।

লালন শাহ্ ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে ঝিনাইদহ, মতান্তরে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়ার ছেউরিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।

common.content_added_by

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

common.please_contribute_to_add_content_into বহুনির্বাচনি প্রশ্ন.
Content

সৃজনশীল প্রশ্ন

common.please_contribute_to_add_content_into সৃজনশীল প্রশ্ন.
Content
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion